আফগানিস্তানে তালেবান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ অর্থসহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট আরও নাজুক হয়েছে। খাবার ছাড়াও লাখ লাখ আফগান অর্থের অভাবে পড়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা থেকে এ খবর জানা গেছে।
খবরে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের দুর্দশাগ্রস্ত এই বিপুলসংখ্যক মানুষের একজন হলেন শুকরুল্লাহ যিনি অর্থের অভাবে বাসা থেকে চারটি কার্পেট কাবুলের চমন ই হোজোরি এলাকায় বেচতে এনেছেন। যেখানে শুকরুল্লাহ বেচতে এসেছেন সেখানে তার মতো অন্যান্যদের ফ্রিজ, কুশন, ফ্যান, বালিশ, কম্বল, চামচ, থালাবাটি, পর্দা, বিছানার চাদর, ম্যাট্রেস, হাঁড়ি-পাতিলসহ বিভিন্ন জিনিসও দেখা গেছে।
গৃহস্থালির ব্যবহার্য এসব সামগ্রী শুকরুল্লাহর মতোই বেচতে এনেছেন হাজারো মানুষ। সবারই অর্থ দরকার। অথচ ২০ বছর ধরে এসব সামগ্রী ছিল তাদের নিত্যদিনের সঙ্গীর মতো।
আফগান নাগরিক শুকরুল্লাহ বলেন, ‘আমি কার্পেটগুলো কিনেছিলাম ৪৮ হাজার আফগানিতে (৫৫৬ মার্কিন ডলার)। এখন এগুলো বেচে বড়জোর ৫ হাজারের কিছু বেশি আফগানি (৫৮ মার্কিন ডলার) পেতে পারি।’
গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, আফগানিস্তানের জনগণের ৯৭ শতাংশের বেশি আগামী বছরের মাঝামাঝি দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাতে পারে।
গত ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দেশটিতে অর্থপ্রবাহ বন্ধ করে দেয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এরপর আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের প্রায় এক হাজার কোটি ডলার আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে জরুরি সহায়তা তহবিলের ৪৪ কোটি ডলারও আটকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
এদিকে রয়টার্স ও এএনআই জানায়, আফগানিস্তানে মানবিক সংকট এড়াতে ৬০ কোটি (৬০০ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার সহায়তা চায় জাতিসংঘ। আফগানিস্তানকে সহায়তার লক্ষ্যে আজ সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনও আয়োজন করেছে জাতিসংঘ। এর আগে সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আফগানিস্তানে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন হয়। সেই সঙ্গে পালিয়ে যান যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও তাঁর সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যে দেশটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে তালেবান।