২ মার্চ ঝুঁকিমুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশ ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিএমএসএফ-এর আহবানে দেশব্যাপি কলম বিরতি কর্মসূচি পালিত হয়।সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাচ্ছে, কুপিয়ে হত্যা করছে, প্রকাশ্যে রাস্তায় পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে ফেলছে, গাছে বেঁধে নির্যাতন করছে। রাষ্ট্রের স্বার্থে পুলিশ-সাংবাদিককে আবারো একযোগে কাজ করার পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম নেতৃবৃন্দ।
সাংবাদিকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বাইরে রেখে আইনটি সংশোধনও জরুরী বলে মতপ্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ। ২ মার্চ দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ঢাকা জেলার আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত কলম বিরতিকালে নেতৃবৃন্দ একথা বলেন। সভাপতির ভাষণে আহমেদ আবু জাফর বলেন- ১৬ পৃষ্ঠার পত্রিকা হয় মূলধারা আর ৪ পৃষ্ঠার পত্রিকা কোনো ধারায় পড়েনা। এই মনোভাব নিয়ে সাংবাদিকদের অব্যাহত নির্যাতন এদেশ থেকে বন্ধ করা যাবেনা। তাই তিনি সাংবাদিক নিয়োগে নীতিমালা প্রণয়নসহ সরকারের কাছে ১৪ দফা যৌক্তিক দাবি তুলে ধরেন।
আরো বক্তব্য রাখেন বিএমএসএফ এর সহ-সভাপতি ড. সাজ্জাদ চিশতী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, যুগ্ম-সম্পাদক ইকবাল হোসেন রুবেল, সহ-সম্পাদক খায়ের হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবুল হাসান বেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবুবকর তালুকদার, কবির নেওয়াজ ও মোনালিসা মৌ, শিক্ষা সম্পাদক গাউছ উর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা ও জাতীয় সংবাদ সংগ্রহ সংস্থা এনএনসির প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব মাসুম বিল্লাহ। মাসুম বিল্লাহ তার অগ্নিঝরা বক্তব্যে বলেন, কলম বিরতিতে সারা বাংলাদেশ নয়; সারা বিশ্ব কেঁপে উঠত।কিন্তু তাদের ঐক্যহীনতার কারণে তারা লাঞ্চিত অপমানিত। সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সকল সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলর চাপরাশিরহাট স্থানীয় আওয়ামীলীগের দ’ুগ্রুপের সংঘর্ষকালে অস্ত্র ব্যবহারের ভিডিওধারণ করছিল মুজাক্কির। ক্ষিপ্ত হয়ে একটি পক্ষের সন্ত্রাসীরা তাকে ধরে নিয়ে ভিডিও ডিলেট করতে চাপ প্রয়োগ করে। ভিডিও ডিলেটে অসম্মতি জানালে তাকে গুলি করা হয়। তিনদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। সম্প্রতি সংবাদের জেরধরে গাজীপুরে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিককে পিটিয়ে তিনটি হাতপা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে কামাল হোসেনকে বালু-পাথরখেকো সন্ত্রাসিরা গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনকে মধ্যযুগীয় বর্বরতাও হার মেনে যায়। বিএমএসএফ পটুয়াখালী সভাপতি হারুন-অর রশীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাসহ দেশব্যাপী সাংবাদিক হয়রাণী, নির্যাতন, ছাটাই ও মামলায় গোটা সাংবাদিক সমাজ অতিষ্ট।
আজ সারাদেশের তিন শতাধিক পত্রিকা, বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনসমুহ বিএমএসএফ ঘোষিত কলম বিরতি স্বতস্ফুতভাবে পালন করে সরকারের নিকট সাংবাদিক সুরক্ষায় আইন প্রণয়নসহ ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানান।
বিএমএসএফের পক্ষ থেকে সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।