মৃত্যুর এক মাসের মাথায় প্রকাশ্যে এলো ডিয়েগো ম্যারাডোনার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট। প্রতিবেদনে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি সম্পর্কে উঠে এসেছে- মাদক নয়, ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী মহাতারকার মৃত্যু হয়েছে ঘুমের মধ্যে, হার্ট অ্যাটাকে।
গত ২৫ নভেম্বর বুয়েন্স আয়ার্সে নিজ বাড়িতে মৃত্যু হয় ম্যারাডোনার। প্রাথমিকভাবে ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ধারণা করা হয়। তবে গো ধরেছিলেন আর্জেন্টাইন সাবেক অধিনায়কের আইনজীবী মাতিয়াস মোরলা, ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোল্ডো লুককে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি জানান তিনি। দাবি মেনে তদন্ত শুরু করে আর্জেন্টিনা পুলিশ। অভিযান পরিচালনা করা হয় লুকের বাড়িতেও।
এছাড়া ঘুমের আগে কোনো মাদক, অ্যালকোহল নিয়েছিলেন কিনা ৬০ বছর বয়সী কিংবদন্তি, সেটাও জানা জরুরি ছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ম্যারাডোনার রক্তে অ্যালকোহল বা মারিজুয়ানার কোনো নমুনাও পাওয়া যায়নি।
টক্সিলোজিক্যাল রিপোর্টে মাদক না পাওয়া গেলেও জানা গেছে, অবসাদ ও হতাশা কাটানোর জন্য নিয়মিত ওষুধ নিতেন ম্যারাডোনা। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, পুরোপুরি কার্যকারিতা হারিয়েছিল তার কিডনি ও ফুসফুস। সাধারণ মানুষের হৃৎপিণ্ডের তুলনায় ম্যারাডোনার হৃৎপিণ্ড ওজনে দ্বিগুণ হয়ে উঠেছিল বলেও জানা গেছে।
শারীরিক নানা জটিলতা এবং সপ্তাহ দুয়েক আগে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের ধাক্কাও ম্যারাডোনার মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। হৃৎপিণ্ড তার কাজ করার বন্ধ করে দেয়ায় ফুসফুসে তরল বৃদ্ধি পায় এবং তাতেই ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয়।
এদিকে বাবার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সমালোচনাকারীদের একহাত নিয়েছেন ম্যারাডোনা কন্যা জিয়ান্নিনা। টুইটারে জানিয়েছেন, মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছিলেন সবার চিরচেনা ম্যারাডোনা।
‘সব বদমাশগুলো অপেক্ষা করে ছিল যে, ময়নাতদন্তে উঠে আসবে আমার বাবা অ্যালকোহল, মারিজুয়ানায় আসক্ত হয়ে মারা গেছেন। আমি ডাক্তার নই, কিন্তু বুঝতে পারছিলাম তিনি ক্রমেই ডুবে যাচ্ছিলেন। ঠিক রোবটের মতো কথা বলতেন, যা মোটেও তার কণ্ঠ ছিল না।’