ট্রাকচালক স্বপন মিয়ার মতো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকেরাও পদ্মা সেতুর অপেক্ষায়। তাঁরা সেতু চালু হলে সহজে শস্য, সবজি ও মাছ ঢাকায় পাঠাতে পারবেন। উদ্যোক্তারা অপেক্ষায় পুঁজি নিয়ে, কাঁচামাল ও পণ্য আনা-নেওয়া সহজ হলে তাঁরা কারখানা করবেন। তরুণেরা অপেক্ষায়, তাঁরা চান কাজের খোঁজ। পরিবহন ব্যবসায়ীরা আরও বেশি বাস নামাতে চান। তাঁদের আশা, যোগাযোগ সহজ হলে মানুষের চলাচল বাড়বে।
এই অপেক্ষা গত ২০ বছরের। ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতুর প্রাক্-সম্ভাব্যতা যাচাই করে। সেই বছর থেকেই সেতু নির্মাণের আশা তৈরি হয়। পদ্মা সেতুর কাঠামো দাঁড়িয়ে যাওয়ায় স্বপ্নও বাস্তব রূপ পাচ্ছে। সরকার ও সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞদের আশা, জটিল কাজ সব শেষ হয়ে যাওয়ায় আগামী দেড় বছরের মধ্যে সেতুটি চালু করা যাবে।অপেক্ষা গত ২০ বছরের। ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতুর প্রাক্-সম্ভাব্যতা যাচাই করে। সেই বছর থেকেই সেতু নির্মাণের আশা তৈরি হয়। পদ্মা সেতুর কাঠামো দাঁড়িয়ে যাওয়ায় স্বপ্নও বাস্তব রূপ পাচ্ছে। সরকার ও সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞদের আশা, জটিল কাজ সব শেষ হয়ে যাওয়ায় আগামী দেড় বছরের মধ্যে সেতুটি চালু করা যাবে।
পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণের জেলার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা জানতে চেয়েছিলাম সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হানের কাছে। অধ্যাপক রায়হান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের আরেক অধ্যাপক বজলুল হক খন্দকারের সঙ্গে ২০১০ সালে সেতু বিভাগের জন্য পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে একটি সমীক্ষা করেন। সেলিম রায়হান বলেন, ‘আমাদের সমীক্ষায় উঠে এসেছিল যে সেতুটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়াবে। এ সমীক্ষায় রেল সংযোগের বিষয়টি ছিল না। পরে যেহেতু রেল যুক্ত হয়েছে, সেহেতু সেতুটি আরও বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
কীভাবে সেতুটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তার ব্যাখ্যাও দেন সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, ঢাকা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার। এই বাজারের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াবে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতু তৈরিতে যে ৩১ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হচ্ছে, রেল সংযোগে যে ৩৯ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় হবে, সেটাও জিডিপিতে প্রভাব ফেলবে। কারণ, প্রকল্পের ব্যয়ের টাকা জিডিপিতে যোগ হবে। পরোক্ষভাবে চাহিদা বাড়াবে পণ্য ও সেবার।