অমিত শাহ থেকে তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন্দ্রের দাবির সঙ্গে বাস্তবের মিল কতটা!
ঘটনা হলো, এদিনই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবড়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ কাপ্পানের গ্রেপ্তারি নিয়ে যোগী সরকারের রিপোর্ট তলব করেছে। হাথরস যাওয়ার পথে এই সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে যোগীর পুলিশ। এখনও জামিন পাননি তিনি। এই মামলায় কেরালার ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট ইউনিয়ন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। তাদের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে কপিল সিবাল বলেন, ‘এফআইআরে কোনও অপরাধের উল্লেখ না-থাকা সত্ত্বেও গত ৫ অক্টোবর থেকে এই সাংবাদিক জেলে রয়েছেন।’ সেই সওয়াল শুনেই শীর্ষ আদালত উত্তর প্রদেশ সরকারকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে। আগামী শুক্রবার ফের মামলার শুনানি। এর মধ্যে ইউনিয়নের তরফে জেলে কাপ্পানের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করা হলেও যোগী সরকার তার অনুমতি দেয়নি।
যোগী সরকারের বিরুদ্ধে যখন এই অভিযোগ, তখন এদিন ন্যাশনাল প্রেস ডে-তে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতারক্ষায় তাঁদের সরকার ও দল কতটা সচেষ্ট, তা তুলে ধরতে ময়দানে নামেন শাহ, জাভড়েকরেরা। শাহ টুইট করেন, ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতারক্ষায় নরেন্দ্র মোদী সরকার দায়বদ্ধ। বরং, যারা এই স্বাধীনতা খর্ব করতে চায়, মোদী সরকার তাদের বিরোধিতা করে।’ এক ওয়েবিনারে জাভড়েকর আবার সংবাদমাধ্যমকে ‘দায়িত্বপূর্ণ স্বাধীনতা’ বজায় রাখার উপদেশ দিয়েছেন। জরুরি অবস্থার সময়ে এবিভিপি-র নেতা হিসেবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য তিনি জেলেও গিয়েছেন বলে জাভড়েকরের দাবি। তাঁর বক্তব্য, এখন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা অনেক জায়গায় খর্ব হচ্ছে। যদিও কোথায় খর্ব হচ্ছে, তা খোলসা করেননি তিনি। শাহ-জাভড়েকরের মন্তব্যে তাই প্রশ্ন উঠেছে, সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামীর নাম সুইসাইড নোটে থাকা সত্ত্বেও তাঁর গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে তো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ঝড় তুলেছিল গেরুয়া শিবির। তা হলে আর এক সাংবাদিক সিদ্দিকের ক্ষেত্রে কেন চুপ বিজেপি নেতৃত্ব?
কাপ্পানের সঙ্গে আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছিল মথুরা পুলিশ। এই তিনজনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ ও জঙ্গি কার্যকলাপের অভিযোগ আনা হয়েছে। গত শুক্রবার এই তিন জনের জামিনের আবেদন খারিজ করেছে মথুরা আদালত। কাপ্পানের পক্ষেও ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করা হয়েছে উত্তর প্রদেশের আদালতে।
অন্য দিকে, টিআরপি-বিতর্কের নিরসনে একটি কমিটি তৈরির কথা জানিয়েছেন জাভড়েকর। এ ছাড়া প্রেস কাউন্সিলকে আরও শক্তিশালী করা এবং বৈদ্যুতিন মাধ্যমের জন্য ‘কোড অফ কনডাক্ট’-এর কথাও বলেছেন মন্ত্রী। এর আওতায় সব ধরনের বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে আনার ভাবনা রয়েছে কেন্দ্রের।