নিউজস্বাধীন বাংলা: বহু আগেই তিনি ‘দালল’ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিলেন। এর প্রমাণও তিনি দিয়েছিলেন বহুবার। এমনকি তিনি শামীম ওসমানের কর্মী দাবি করে বক্তব্য রেখেছিলেন সভা মঞ্চেও। এবার তিনি প্রমাণ করলেন নিজেকে, তিনি শামীম ওসমানের সাচ্চা একজন কর্মী। এই তিনি আর কেউ নন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য কুসিদজীবি শাহ আলমের সম্বন্ধি এবং জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির আহŸায়ক আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস।
বিএনপির ‘ওয়ানম্যান শো’ এই নেতা ৭ সেপ্টেম্বর এসেছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ শামীম ওসমানের জনসভায়। তবে তিনি বিএনপির সভা সমাবেশ বা কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে একা একা এলেও এদিন কিন্তু একা আর আসেননি। সাথে নিয়ে এসেছিলেন গুটি কয়েক কর্মী সমর্থকও।
এদিকে আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসকে সাংসদ শামীম ওসমানের জনসভাতে উপস্থিত হতে দেখে অনেকেই এ নিয়ে মুখরোচক অনেক মন্তব্য করেন এবং অনেকেই আজাদ বিশ্বাসকে দালাল হিসেবেই আখ্যা দেন।
অন্যদিকে শামীম ওসমানের জন সমাবেশে বিএনপি নেতা আজাদ বিশ্বাসের উপস্থিতি নিয়ে বিএনপির মধ্যেই ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। দাবি উঠেছে তার বহিস্কারের।
এদিকে এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদের কাছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ টুডেকে বলেন, এগুলো নিয়ে আমরা অনেকবারই কথা বলেছি। এসব আমরা পছন্দ করি না। নেতাকর্মীরাও এসব পছন্দ করে না।
শামীম ওসমানের সমাবেশে আজাদ বিশ্বাসের উপস্থিতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে মন্তব্য করে মামুন বলেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে যা করণীয় তা করার জন্য কাজ করছি। কেন্দ্রও তাদের ব্যাপাগুলো ভালো জানে। তারাই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।
শামীম ওসমানের জনসভাতে আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস উপস্থিতি নিজেদেরকে ‘বিব্রত’ করেছে দাবি করে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল নারায়ণগঞ্জ টুডে’কে বলেন, তার উপস্থিতি বিব্রতকর এবং অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন তিনি। এ নিয়ে জেলা বিএনপির সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা হয়েছে। আশা করছি দল তার বিরুদ্ধে দলীয় তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিএনপির পদ বহন করে শামীম ওসমানের জনসভায় জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও থানা বিএনপির আহŸায়ক আজাদ বিশ্বাসের উপস্থিতিকে ‘নৃশংস তামশা’ হিসেবে উল্লেখ করে জেলা বিএনপির আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব গণমাধ্যম কে জানান, এসব দৃশ্য দেখলে শুনলে বিএনপির নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। এদের বিরুদ্ধে দল শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এরা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করাকে কোনো কিছুই মনে করে না। এরা নির্লজ্জ, বেহায়া। এদের বিরুদ্ধে দলীয় শাস্তির দাবি জানাই।
প্রসঙ্গত, নিজের কোনো যোগ্যতা না থাকার পরও ভগ্নিপতি বিএনপির নির্বাহী সম্পাদক শাহ আলমের বৌদলতে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস। পরবর্তীতে এই তিনিই জেলা বিএনপির সহসভাপতি এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির আহবায়ক হোন শাহ আলমেরই আশির্বাদে।
দলীয় সূত্র মতে, বিএনপির পদ ব্যবহার করলেও আজাদ বিশ্বাসকে দলীয় কর্মসূচি তেমন একটা দেখা না গেলেও শামীম ওসমানের সভা সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত দেখা যেত। বক্তব্যও রাখতেন তিনি। এরমধ্যে একবার কমান্ডার গোপিনাথ তার বক্তব্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে কুকুর বলে সম্বোধন করেছিলেন। ওই সভা মঞ্চে আজাদ বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন। শুধু তাই নয়, হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে মাইক হাতে সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজেকে শামীম ওসমানের কর্মী হিসেবেও তিনি দাবি করেছিলেন।
