হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস ছিলই। সপ্তাহের শেষে কলকাতার তাপমাত্রা অনেকটাই কমবে বলে জানিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সেই মতোই রবিবার সকালে শহরের তাপমাত্রা নেমে গেল ১৮ ডিগ্রিতে। তবে আগামী দু দিন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
রবিবার সকালে ১৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামল কলকাতার তাপমাত্রা। স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯৫ শতাংশ। তবে এই রেশ কাটিয়ে সোম ও মঙ্গলবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
ইতমধ্যেই শীতের আমেজ ধরা পড়েছে মহানগরীতে। বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকেই তাপমাত্রা নামতে শুরু করে শহর ও শহরতলিতে। ভোর হলেই শিরশিরানি অনুভূত হচ্ছে। বেলা বাড়লে তা উধাও হলেও আবার সন্ধে নামতেই ফিরে আসছে ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। তবে, আবহবিদদের কথায়, উত্তুরে হাওয়া তখনই বাংলা পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিতে পারে, যখন মধ্য ভারতে ঠিকঠাক উচ্চচাপ বলয় থাকে। সে-ই চালিকাশক্তির কাজ করে। কিন্তু মরসুমের শুরুতেই এমনটা সাধারণত হয় না। এই মুহূর্তে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ নেই, তাই বৃহস্পতিবার থেকে খানিকটা ছাপ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সোমবার বা মঙ্গলবার থেকে আবার তাপমাত্রা বাড়তে পারে। দক্ষিণ ভারত লাগোয়া বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে মেঘ ঢুকে আসবে। বাধা পাবে শুকনো হাওয়া।
হিমালয়ের পাহাড়ে বরফ পড়ায় অক্টোবরের শেষ থেকেই ভালো ঠান্ডা পড়েছে উত্তর ভারতে। বুধবার দিল্লির তাপমাত্রা নেমে যায় ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে তার ছিটেফোঁটাও আসছিল না বাংলায়। অবশেষে মুখ তুলে তাকিয়েছে প্রকৃতি। শুক্রবার মরসুমে প্রথমবার কলকাতার পারদ নামে কুড়ির নীচে। আলিপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নামে ১৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। জেলায় ঠান্ডা স্বাভাবিক ভাবেই বেশি।
নভেম্বরের শুরুতে মহানগরে তাপমাত্রা কুড়ির নীচে নামা তাৎপর্যপূর্ণ নয় আদৌ। বরং আজকাল বেশ কয়েক বছর এর চেয়ে বেশি ঠান্ডা মিলেছিল। যেমন ২০০৯, ২০১১, ২০১২ সালে অক্টোবরেই তাপমাত্রা কুড়ির নীচে নেমে গিয়েছিল। এর মধ্যে ২০১১ সালে ৩০ অক্টোবর কলকাতার পারদ নেমেছিল ১৮.৯ ডিগ্রিতে। একইরকম প্রবণতা দেখা যায় সে বছরের নভেম্বরের প্রথম চার দিনেও। ২০১৩ সালের নভেম্বরের প্রথম দু’দিন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ১৯.২ ও ১৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছর ৭ নভেম্বর তাপমাত্রা ছিল ১৯.৬ ডিগ্রি।
শনিবার পুরুলিয়ার তাপমাত্রা নেমেছে ১৪.৪ ডিগ্রিতে, কাছাকাছি পানাগড় (১৪.৬ ডিগ্রি)। শ্রীনিকেতনের তাপমাত্রা নেমেছে ১৫.৬ ডিগ্রিতে। আসানসোলের তাপমাত্রা ১৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। ১৭ ডিগ্রি ছোঁয় বাঁকুড়া, কাঁথি, কৃষ্ণনগরের পারদ। কলকাতার উত্তরে দমদমের তাপমাত্রা নামে ১৮.৬ ডিগ্রিতে। সল্টলেকে (২০) কিছুটা বেশি। তবে ব্যারাকপুরের (১৭.৬) ঠান্ডা বাঁকুড়ার মতোই। যদিও কলকাতা তো বটেই, বেশির ভাগ জায়গার দিনের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রির উপরে রয়েছে। যেমন শনিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়ালস। রবিবার শহরের তাপমাত্রা ১৮ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা না কমলে ঠান্ডার অনুভূতি শুধু রাতে বা ভোরেই মিলবে।