এক দশক আগে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিংয়ে পাঁচ বছরের শিশু খন্দকার সামিউল আজিম ওয়াফিকে হত্যার ঘটনায় তার মা আয়েশা হুমায়রা ওরফে এশা ও তার প্রেমিক শামসুজ্জামান বাক্কুর ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।
ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম রোববার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দুই আসামি আয়েশা হুমায়রা এশা এবং শামসুজ্জামান বাক্কু জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। আর মামলার বাদী সামিউলের বাবা কে আর আজম বিচার চলার মধ্যেই মারা গেছেন।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি দুই আসামির প্রত্যেককে একটি ধারায় পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।
রায়ের পর্যবেক্ষণে তিনি বলেছেন, এশা ও বাক্কুর সম্পর্কের বিষয়টি জেনে ফেলায় শিশু সামিউলকে তারা হত্যা করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলা প্রমাণে সক্ষম হয়েছে।
“এমন কাজ তারা করেছে, যে জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যাপ্ত নয়, সেজন্য তাদের মৃত্যদণ্ড দেওয়াই সমীচীন।”
সামিউলের বাবা কে আর আজমের বন্ধু ও ব্যক্তিগত আইনজীবী ইসলাম উদ্দিন বিশ্বাস এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ফারুক উজ্জামান ভূঁইয়া এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।নবোদয় হাউজিংয়ের গ্রিনউড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্লে গ্রুপের ছাত্র ছিল সামিউল। মায়ের ‘পরকীয়া’র জেরে ২০১০ সালের ২৩ জুন রাতে আদাবরে নিজেদের বাসায় সে খুন হয়।
মামলার বিবরণে বলা হয়, বাক্কু ও এশার ‘প্রেমের সম্পর্ক’ দেখে ফেলায় সামিউলকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয় আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ে সামিউলদের বাসার পাশে।
লাশ উদ্ধারের পর সামিউলের মা এশা এবং তার প্রেমিক বাক্কুকে আসামি করে আদাবর থানায় হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে মামলা করেন সামিউলের বাবা কে আর আজম।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর দুই আসামিই আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিলেন বলে সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।
২০১১ সালের ২৫ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার ওসি কাজী শাহান হক এ মামলায় বাক্কু ও এশার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।পরের বছর ১ ফেব্রুয়ারি ওই দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। এর সাত দিনের মাথায় আদালতে বাদী আজমের জবানবন্দি ও জেরা গ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।