মন দিনে কী লিখতে মন চায় এমন ঘনঘোর বরিষায়। হাইস্কুলে পড়ার সময় পড়েছিলাম এই লাইনটা। সম্ভবত প্রমথ চৌধুরীর একটি গল্পের, প্রথমেই এই লাইনটি ছিল। যদিও ভুলে যাওয়ার কথা কারণও যথেষ্ট রয়েছে, প্রায় বিয়াল্লিশ বছর আগের কথা।
আমি নিজেই সমস্যাগ্রস্ত, যদিও আল্লাহ্ পাকের রহমতে কাটিয়ে উঠেছি। এমন দিনে কি লিখতে মন চায়?
মানুষের উৎপাত, উপদ্রব অর্থাৎ বাছবিচারহীনভাবে চলাফেরা করছে মহামারীর জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকা সত্ত্বেও। দেখে আর সহ্য হচ্ছে না তাই বিষয়টি নিয়ে লেখার ইচ্ছা হলো। এদিকে মানুষের উৎপাত লাগামহীন অন্যদিকে এই উৎপাত যারা নিয়ন্ত্রণ করবে তাদের অনুপস্থিতি লক্ ডাউনের ফল পাওয়া যাবে না।
প্রসঙ্গত কারণে বলতে হয়, বাংলাদেশ সরকারের প্রধান তিনটি অঙ্গ হলো: আইন বিভাগ; (The Lagislature Branch-to make the laws) বিচার বিভাগ;(The Judiciary Branch-to interpret the laws) এবং নির্বাহী বিভাগ( The Executive Branch-to enforce the laws) অতি সহজ ভাষায় বললে তিনটি অঙ্গ তিন ধরণের কার্য সম্পাদন করে থাকে।
আইন বিভাগ, আইন প্রনয়ণ করে থাকে। বিচার বিভাগ, বিচার সংক্রান্ত কাজ করে ও ব্যখ্যা দিয়ে থাকে এবং নির্বাহী বিভাগ, আইন বাস্তবায়ন করে থাকে। আইন ভঙ্গকারীকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচারের সম্মুখীন করা। অপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন করানো এই কাজটি সাধারণত পুলিশ কর্তৃক সম্পাদন করা হয় যেহেতু পুলিশ বাহিনী নির্বাহী বিভাগেরই অংশ।
মানুষ স্বাধীন ও অবাধে চলাফেরা করতে পছন্দ করেন। সেখানে কোন বাধা আসলে স্বভাবতই মানতে অপছন্দ করেন। সরকার কর্তৃক আদেশ জারী করা হয়েছে লক্ ডাউনের। কিন্তু আদেশ মানা হচ্ছে না, জনতা হু হু করে ছুটে বেড়াচ্ছে। মাস্কবিহীন লোকজন একেঅপরের সাথে ঘেঁষাঘেঁষি করে, মহব্বতের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিশেষ করে টিন এজারদের এরকম বেশি করতে দেখা যাচ্ছে। কে এই জনতাকে রুখবে?
জনস্বার্থে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কেউ ভঙ্গ করে অন্যের ক্ষতিসাধন না করতে পারে তাই ক্ষমতা প্রয়োগ করে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। শুধু তাই নয় সর্বশক্তি প্রয়োগ করে হলেও জনগণের এই বৈষ্যিক মহামারী পরিস্থিতির হাত থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
কিন্তু সেই ক্ষমতা যারা প্রয়োগ করবে তাদের তৎপরতা চোখেই পরেনি। এই কোভিড নিয়ে গতবছর গোঁড়ার দিকে দু-একটি পোষ্ট দিয়েছিলাম। বিষয়বস্তুতে উল্লেখ করেছিলাম Crowd Control—বিস্তারিত আলোচনায় বলছিলাম চারটি ধাপে মারমুখী জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।সর্বশেষ ধাপটি প্রয়োগের মাধ্যমে অর্থাৎ ক্ষত করে হলেও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে সংক্রমণ রোধ করতে হবে।সর্বশেষ ধাপ প্রয়োগ করে হলেও অকারণে জনতার ঘুরাফিরাকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে।যদিনা পাবলিক সরকার কর্তৃক ঘোষিত নির্দেশ মানে।
একটি জোকস্ এর কথা মনে হয়ে গেল। পাবলিক বাসে এক মহিলা উঠে দেখে মহিলা সীটে পুরুষ বসে রয়েছে। মহিলা বসতে না পেরে পুরুষ লোকটিকে জায়গা ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু পুরুষ লোকটি কোন কর্ণপাত করছেন না। এক পর্যায়ে মহিলা কিছুটা রেগে গিয়ে বললেন দেখেছেন ওখানে মহিলা সীট লেখা। পুরুষ বললেন আপনি ওখানে গিয়ে বসেন। অর্থাৎ উপরে যেখানে লেখা আছে।
বিষয় কী দাঁড়াল? আইন তৈরি করে বা আদেশ প্রদান করলেই হবেনা। তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করছে কিনা, না করলে বাধ্য করানোই আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ। তাহলেই দেশ ও জনগণের মঙ্গল হবে।
০৯/০৪/২০২১