চলার পথে অভিজ্ঞতার ঝুলিতে আরেকটি বিষয় যোগ হলো। গত ২৬/১/২০২১ খ্রি: দুপুরে জুতা উল্টে পরে যাই। তখনই বেশ ব্যাথা অনুভব করি, আস্তে আস্তে পাটা খুব ফোলে উঠে ও রক্ত জমাট বেধে কালো হয়ে যায়। ব্যাথা খুব একটা ছিল না তবে হাঁটতে বেশ অসুবিধা হচ্ছিল। আমার কাছে শুনে এবং পায়ের অবস্থা দেখে শুভাকাঙ্খী অনেকেই বলেছেন বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে ডাক্তারের সরণাপন্ন হওয়ার জন্য।
ডাক্তারের কাছে যেতে বরাবরই অনীহা, তাই করে প্রায় তিন চারদিন খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে চলে পার করলাম। কিন্তু না, ব্যাথা খুব একটা অনুভব না হলেও পা ফোলা কিছুতেই কমছিল না আর খুঁড়িয়ে হাঁটাটা বেড়েই চলল। ফ্রাকচার হওয়া পাটা নিয়ে এবার বিরক্ত হলাম আমি নিজেই। তাই স্বামীকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম।
যা হোক, যথারীতী ডাক্তার সাহেবের কিছু বকা শুনলাম, বেশ দেরি করে ফেলেছি বলে। জানালেন পাটা ফ্রাকচার না হয়ে বরং ভাংলে চিন্তা কম ছিল। ফ্রাকচার হলে ঠিক হতে সময় লাগে আর চলাফেরায় খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
জানি, ফ্রাকচার হওয়া কি আমরা সবাই জানি, তবুও বলি ফ্রাকচার হওয়া মানে শরীরের কোন হাড় ফেটে যাওয়া বা হাড়ে চিড় ধরা। অতিসত্বর ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে প্রতিকার না করলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। কোন কোন সময় অপারেশন পর্যন্ত করতে হয়।
এবার আমার পায়ের কথা বলি, ডাক্তার সাহেব এক্সরে দেখার পর সাথে সাথে প্লাস্টার করে দিলেন। বললেন এক সপ্তাহ পর আবার দেখিয়ে আসতে হবে। প্লাস্টার করলেন তিন সপ্তাহের (২১ দিন) জন্য। আজ সকাল বেলা প্লাস্টার করে আসলাম। অল্প সময়ের মধ্যেই খুব অস্থির হয়ে উঠেছি।
এত কথা বলার কারণ হচ্ছে, আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি বেশ সুস্থ সবল মানুষ। ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিক বা অন্যান্য যে কোন অসুখ, সব কিছু থেকে আল্লাহ হেফাজতে রেখেছেন এখন পর্যন্ত।
সুস্থতা কত বড় আল্লাহর নিয়ামত- কথার মর্মার্থ হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি। পাটা লম্বা করে বসে থাকতে বা শুয়ে থাকতে কি যে অসহনীয় লাগছে তারই যন্ত্রণা সকলের সাথে শেয়ার করার জন্য আজ আমার এই লিখা। শরীরের যেকোন জায়গায় ফ্রাকচার হলে যেন কেউ আমরা বিষয়টাকে অবহেলা না করি!
ক্রেচ দিয়ে দুই একবার হেঁটেই খুব অস্থির হয়ে গেছি। খুব করে অনুভব করছি যারা সারা জীবন ক্রেচ দিয়ে চলাফেরা করে। আমাকে হয়ত এ কটা দিন ক্রেচ দিয়ে হাঁটতে হবে কিন্তু যারা সারা জীবন ক্রেচ বহন করে চলেছেন, তাদের জন্য মনটা খুব ভারাক্রান্ত হয়ে আছে। ওদের জন্য আমার এ লিখার মাধ্যমে সহানুভূতি ও সম্মান জানাচ্ছি।
সুস্থ রাখার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আল্লাহ যেন সবাইকে ভাল রাখেন, নিরাপদ রাখেন। আমিন।