ক্তরাজ্যে ছড়িয়ে পড়া অধিক সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসটি যুক্তরাষ্ট্রের আরও একটি অঙ্গরাজ্যে শনাক্ত হয়েছে। কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের পর এবার ক্যালিফোর্নিয়াতেও ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ভাইরাসটি। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কলোরাডোর একদিনের মাথায় ক্যালিফোর্নিয়ায় নতুন বৈশিষ্ট্যের ভাইরাসটি শনাক্ত হলো। বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি-ও উপস্থিত ছিলেন। তবে ফাউচি বলেন, এ সংক্রমণের ঘটনায় তিনি অবাক হননি। বরং এটিই হওয়ার কথা ছিল।
গভর্নর গ্যাভিন নিউসম-এর ঘোষণার পর সান ডিয়াগো কাউন্টির কর্মকর্তারা জানান, নতুন বৈশিষ্ট্যের ভাইরাসটিতে শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির বয়স ৩০ বছর। তার কোনও ভ্রমণের ইতিহাস নেই।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির মধ্যে গত ২৭ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো নতুন ভাইরাসটির কিছু উপসর্গ দেখা যায়। পরে ২৯ ডিসেম্বর পরীক্ষায় তার নতুন বৈশিষ্ট্যের কোভিড-১৯ ধরা পড়ে। তবে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়নি। তার পরিবারের আরেকজন সদস্যের শরীরেও ভাইরাসটির উপসর্গ ধরা পড়েছে।
কদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কতার কথা জানিয়েছিলেন দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি। এর মধ্যেই দুই রাজ্যে নতুন ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। ফাউচি বলেছিলেন, করোনার সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এখনও আসেনি। দেশ আরও জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে।
গত মাসে থ্যাংকসগিভিং হলিডে শেষে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে গেছে। সংক্রমণের সংখ্যা দুই লাখ এবং দৈনিক গড় মৃত্যু তিন হাজার ছাড়িয়েছে। এ বছর সেখানে বড়দিন ও নতুন বছরের ছুটিতে ভ্রমণ কম হলেও তা উল্লেখযোগ্য।
ফাউচি সিএনএন-কে বলেন, এই উদ্বেগের কথা আমি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে শেয়ার করেছি। আগামী কয়েক সপ্তাহে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে পারে।
এর আগে বাইডেন সতর্ক করে বলেছিলেন, জাতির অন্ধকার দিনগুলো আমাদের পেছনে নয়, সামনে রয়ে গেছে।
সম্প্রতি লন্ডনসহ যুক্তরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে করোনাভাইরাসের এই নতুন এবং অত্যন্ত সংক্রামক স্ট্রেইনটি ছড়িয়ে পড়ে। এটি আগের ভাইরাসের চেয়ে আরও বেশি সহজে এবং দ্রুত গতিতে মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এর ফলে আগামী বছর এতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হার আরও বেড়ে যাতে পারে। বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যাও।
সমীক্ষাটি চালিয়েছে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন-এর সেন্টার ফর ম্যাথমেটিক্যাল মডেল অব ইনফেকশাস ডিজিজ। এতে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের অন্যান্য স্ট্রেইনের তুলনায় নতুন এই স্ট্রেইনটি ৫৬ শতাংশ বেশি সংক্রমণযোগ্য।
১৯ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভ্যাল্যান্স বলেছেন, ভাইরাসটির প্রায় দুই ডজন মিউটেশন রয়েছে যা প্রোটিনকে প্রভাবিত করতে পারে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, ভাইরাসটির নতুন এই স্ট্রেইন সদ্য অনুমোদন পাওয়া ভ্যাকসিনগুলোর কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। তবে ইউরোপের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, নতুন স্ট্রেইনটির ফলে হয়তো ফাইজার ও বায়োএনটেক-এর টিকার কার্যকারিতায় খুব বেশি হেরফের হবে না।