বাদাম শক্তি ও পুষ্টির যথাযথ উৎস। এরা প্রধানত মনো-আন্স্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড যেমন অলিইক এসিড এবং পালমিটোলিইক এসিডের এসিডের আদর্শ উৎস,যা শরীরের এলডিএল বা বদ কোলেষ্টেরলকে কমাতে সাহায্য করে এবং পাশাপাশি এইচডিএল বা ভালো কোলেষ্টেরলকে বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় প্রকাশিত, মনো-আনস্যাচ্যুরেটেড ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাদ্য রক্তে স্বাস্থ্যকর লিপিড প্রোফাইল তোইরী করে করোনারী আর্টারী ডিজিজ এবং ষ্ট্রোক প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
বাদামের পুষ্টিমূল্য:
বাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। কারণ বাদামে রয়েছে-অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন,পলি ফেনল,ফাইবার, সেলেনিয়াম,ভিটামিন-ই, বায়োটিন,পলি এবং মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড, ফোলেট, নিয়াসিন, কপার, ম্যাংগানিজ সহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। বাদামে আরও রয়েছে বায়োএক্টিভ প্লান্ট কম্পাউন্ড এবং ২০ টি অ্যামিনো এসিড। প্রতি সারভিং(২৮ গ্রাম), পেস্তা বাদামে ক্যালরি রয়েছে ১৫৬,কাঠবাদামে রয়েছে ১৫৬, চীনা বাদামে রয়েছে ১৭৬ ক্যালরি,ব্রাজিল নাটে রয়েছে ১৮২ ক্যালরি এবং কাজু বাদামে রয়েছে ১৫৫ ক্যালরি।
বাদামের উপকারিতা:
বাদামে আরও আছে মনোআনসেটারেটেড ফ্যাট। এ ফ্যাটকে বলা হয় গুড ফ্যাট। সাধারণত দেহের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমাতে এ চর্বি সাহায্য করে থাকে।
বাদাম মানবদেহের জন্য অসম্ভব উপকারী। বাদাম ভিটামিন-ই’র সবচেয়ে বড় উৎস। এতে আছে ম্যাঙ্গানিজ এবং প্রোটিন। এ উপাদানগুলো দেহের শক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে থাকে।
গবেষকদের তথ্যানুযায়ী, আঙ্গুরে ফেনোলিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট নামে যে পদার্থ আছে, বাদামেও তা বিদ্যমান। এটি হৃদরোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। ফাইবার পেট পরিষ্কার রাখে এবং হজমশক্তিকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।
নিয়মিত খাদ্য তালিকায় বাদাম থাকলে কোলন ক্যান্সার শরীরের ধারে-কাছে মোটেও ঘেঁষতে পারবে না বলে মত দেন চিকিৎসকরা।
বয়স যত বাড়ে দাঁত এবং হাড়ের সমস্যাও তত বৃদ্ধি পায়। ক্ষয় হতে শুরু করে হাড় এবং শখের শুভ্র সুন্দর দাঁতগুলো। কিন্তু বাদাম খেলে এ সমস্যা খুব সহজেই এড়িয়ে চলা সম্ভব। কারণ বাদামে আছে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-ডি, যা বাত রোগীদের জন্যও উপকারী।
চিনাবাদামে বাদামে অ্যালার্জি রয়েছে।তাদেরকে অবশ্যয় সব চিনাবাদাম এবং বাদামের তৈরি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
নানা ধরনের বাদামের মধ্যে পেস্তাতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোস্টেরল। পেস্তাবাদামে লুটেন নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা বয়সের কারণে সৃষ্ট নানা শারীরিক সমস্যা যেমন মাংসপেশির দুর্বলতা, চোখের ছানির সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
উল্লেখ্য, পেনক্রিয়াটাইটিস হলো পেনক্রিয়াস বা অগ্নাশয়ের প্রদাহ। অগ্ন্যাশয় দেখতে অনেকটা (আম) পাতার মতো লম্বালম্বিভাবে উপরের পেটে অবস্থান। অগ্নাশয় ইনসুলিনসহ বিভিন্ন প্রকার হরমোন ও এনজাইম তৈরি করে যা কার্বোহাইড্রেট চর্বি ও প্রোটিন খাবার ডাইজেস্ট হজম করতে সাহায্য করে। এটাতে প্রদাহ ছাড়া পাথর, সিস্ট, টিউমার এবসেস ইত্যাদি রোগ দেখা যায়। আর এটা যদি ক্যানসারে আক্রান্ত হয় তবে তার থেকে নিঃসৃত হরমোন বা এনজাইম আশে-পাশের সবকিছুকে ধ্বংস করে দেয়।