প্রতিদিন অসংখ্য সেবাপ্রার্থী আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে। সরকারি পর্যায়ে যতোটুকু পারি তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। সবাই অসহায়, তবুও কিছু মানুষ যেন মনে রেখাপাত করে রেখে যায়। ছবির এই বাচ্চাটির বয়স মাত্র আট মাস। তার মা মারা গিয়েছে একদম ছোট বয়সে। বাচ্চার বাবা ৩মাস আগে আবার বিয়ে করে নতুন বৌ নিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছে। শিশুটির খরচের জন্য কোন টাকাপয়সা তার বাবা দেয় না। বাচ্চার দাদী যিনি নিজেই বিধবা (বিধবা ভাতা পায়) আজ আমার কাছে বাচ্চাটিকে নিয়ে এসেছিলেন একটি কম্বলের আশায়।
আহা! এই দেবশিশু বাচ্চাটির মাঝে যেন আমার মেয়েদের-ই চেহারা দেখতে পাই। বাচ্চাটির সর্দি লেগেছে, ঘ্যানঘ্যান করছে। বাচ্চাটির সুচিকিৎসার জন্য বকশীগঞ্জ সদর হাসপাতালের ইউএইচএফপিও-র নিকট প্রেরণ করি ও তার চিকিৎসা নিশ্চিত করি। আর যাবার বেলায় তার দাদীকে শুকনো খাবার (১০কেজি চাল, ১কেজি ডাল, ১লিটার তেল, ১কেজি লবন, ১কেজি চিনি, ১কেজি চিড়া, ১/২কেজি নুডলস) এর একটি প্যাকেট ও একটি কম্বল প্রদান করি। বাচ্চাটির আপাতত ভরণপোষণের যেন সমস্যা না হয় সেজন্য যত্ন প্রকল্প থেকে কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়। জানি না বাচ্চাটির জন্য কেমন ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে! মা ছাড়া এক অসহায় পৃথিবী যেন। এই বাচ্চাটিকে দেখে বারবার-ই জান্নাতির কথা মনে হচ্ছিলো। জান্নাতির-ও তো মা নেই, মেয়েটা আজ সংকটাপন্ন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। মা থাকলে হয়তো আগেই চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসতো!
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল শিশু, নিরাপদ হোক তাদের বেড়ে উঠা…
-এনএনসি