কয়েকদিন ধরে আল আকসা মসজিদ ও তার আশে-পাশে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে জেরুজালেমে রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস। জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলায় শিশু-নারীসহ ২০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের মধ্যে ৯টি শিশুও রয়েছে। এতে ৬৫ জন আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। খবর বিবিসি, আলজাজিরার।
এক শিশুর বয়স ১০ বছরের কম বলে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী বিবৃতিতে বিমান হামলার কথা স্বীকার করেছে। হামাসের দুটি রকেট নিক্ষেপ কেন্দ্র ও দুটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানোর দাবি করেছে তারা। এর আগে, ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা ইযাদ্দিন কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র বলেন, আল-আকসা মসজিদ এবং পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাস শহরের শেখ জাররাহ শরণার্থী শিবির থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি না দিলে এর জবাব দেয়া হবে।
ডেডলাইন শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট পর সোমবার সন্ধ্যায় আল কাসসাম ব্রিগেড পূর্ব জেরুজালেমে শতাধিক রকেট হামলা চালায়। এই রকেট হামলার পর ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকার বেসামরিক এলাকায় বর্বরোচিত কায়দায় বিমান হামলা করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইসরায়েলি আগ্ৰাসনের সমালোচনা না করে উল্টো ‘হামাসের রকেট টহামলা বন্ধ করা উচিত’ বলে মন্তব্য করেছেন। এদিকে, সোমবার রাতে তারাবির নামাজ শেষে ফের আল-আকসা মসজিদে হামলা চালায় ইসারয়েলিরা। এ হামলায় অর্ধশতাধিক মুসল্লি আহত হন। এর আগে ভোরেও আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও বোমা ছুড়েছে। সে সময়ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবার বিশ্ব কুদস দিবস উপলক্ষে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে জড়ো হলে তাদের ওপর অভিযান চালায় ইসরায়েলি পুলিশ। পরদিন পবিত্র শবে কদরের রাতেও তাদের ওপর তাণ্ডব চালানো হয়। এতে প্রায় ৪০০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। ইসরায়েলি আদালত থেকে নিজেদের মতো রায় নিয়ে দখলদার ইসরায়েল সরকার শেখ জাররাহ শরণার্থী শিবিরের ফিলিস্তিনি নাগরিকদের উচ্ছেদ এবং তাদের ঘর-বাড়ি ধ্বংস করছে। সেখানে নতুন একটি ইহুদি বসতি স্থাপন করার পরিকল্পনা নিয়ে এই কাজ করছে তেল আবিব।
গত কয়েকদিনে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিরা ফিলিস্তিনিদের সেখান থেকে জোর করে বের করে দেয়ার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হচ্ছে।
নাঈম/নিএ