একজন ডাক্তারকে চিকিৎসা করতে হইলে লাইসেন্স নিতে হয়! ভুল চিকিৎসা করলে তার বিচার হয়। এমন কি রাজনীতি করতে হইলেও নিবন্ধন করতে হয়! সিনেমা বানাইলে সেন্সর পাশ করতে হয়! কিন্তু ওয়াজের ক্ষেত্রে বিধান কি? যে ওয়াজ করতেছে তার ধর্মীয় জ্ঞান, মানবিক বোধ এইগুলা যাচাই করবে কে? সব হুজুরের এলেম বা মানবিক বোধ তো এক না! ওয়াজের মধ্যে অনেক হুজুররে দেখতেছি ভুল তথ্য দেয়, জঘন্য ভাষায় ঘৃণা ছড়ায়, মিসোজিনি ছড়ায়, বিধর্মী বা তাদের দৃষ্টিতে ইসলাম বিরোধীদের পারলে সেখানেই শেষ করে দেয়! কথা হইলো, এই রকম ওয়াজে মানুষ বিগড়াইলে তার বিধান কী? একবার ভাবেন, যে ছেলেটা ওয়াজে যায় এটা ভেবে যে হুজুর যা বলতেছে সেটাই ঠিক, ও ওখান থেকে কি শিক্ষা নিয়ে বের হচ্ছে! তারপর সেই শিক্ষার আলো সে যখন সমাজে ছড়াবে তখন সেই সমাজের চেহারা তো লালমনিরহাটের নারকীয় ঘটনার মতোই হবে!
আরেকটা কথা, এই যে কথায় কথায় কারো মৃত্যুদন্ড চাওয়া, কাউরে কতল করতে চাওয়া এটা ফৌজদারি অপরাধ কিনা! ২০১০-য়ে থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার রিলিজের পর যখন আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে মানব বন্ধন করতেছিল একটা গ্রুপ (সম্ভবত হিজবুত তাহরীরের কিছু শিক্ষক এটার সাথে জড়িত ছিল) এবং দাবী করতেছিল আমার মৃত্যুদন্ড দিতে হবে, তখন আমি এক লইয়ার বন্ধুরে জিজ্ঞেস করছিলাম ‘এটা কি আমার বিরুদ্ধে ভয়োলেন্স ইনসাইট করা হচ্ছে না?’ তখন সে আমারে বলছিল, ‘তুমি তো জানোই, দোস্ত, দেশের নামে, ধর্মের নামে, জাতির নামে ভায়োলেন্স ইনসাইট করলে এটাকে বেশিরভাগ সময়ে মহৎ কাজ হিসাবে দেখা হয়।’
আমার মনে হয়, লালমনিরহাটের ঘটনারে আমরা একটা লাস্ট সিগন্যাল হিসাবে নিতে পারি সমাজটারে ঠিক করার। আমি মোটামুটি ফেয়ারলি ধার্মিক পরিবারে বড় হইছি! ফলে ওয়াজ মাহফিল প্রচুর শুনতে হইছে ছোটবেলায়! আমি মনে করতে পারতেছিনা ঐসব ওয়াজ মাহফিলে আজকের মতো ঘৃণা, বিদ্বেষ, কতল করার আহবান শুনছি কিনা! রাষ্ট্রকে এইগুলা বিবেচনায় নিতে হবে!